Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

এক নজরে

ব্রিটিশ শাসনামলে ১৯১৪ সালে জামালপুর মহকুমাধীনে ইসলামপুর থানা গঠিত হয়। জামালপুর জেলা হওয়ার পর ১৯৮৩ সালের ৩রা নভেম্বর ইসলামপুর উপজেলা প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসলামপুর উপজেলা জামালপুর-২ সংসদীয় আসনের অন্তর্ভুক্ত । এ আসনটি জাতীয় সংসদে ১৩৯ নং আসন হিসেবে চিহ্নিত।

ইসলামপুর উপজেলার আয়তন ৩৪৩.০২ বর্গ কিলোমিটার[১] এবং জনসংখ্যা ২০১১ সনের আদম শুমারী অনুযায়ী ২,৯৮,৪২৯ জন। পুরষ ও নারীর অনুপাত ১০০:৯৯, জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৮৪৫ জন, শিক্ষার হার ৩০.১%।[২]

ইসলামপুর উপজেলা সেই ব্রিটিশ শাসনামল থেকে কাঁসা শিল্পের জন্য বিখ্যাত। এখানে প্রচুর পরিমাণে উন্নতমানের বেগুন চাষ হয়। 

ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা বিধৌত একটি প্রাচীন জনপদের নাম ইসলামপুর। ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার শাখা নদী ও খাল-বিল বহুল এই এলাকা নদীভাঙ্গন ও বন্যাপ্রবণ। প্রাচীনকালে ভূমিকম্পে এই অঞ্চলের ভূ-প্রকৃতি অনেকটা বদলে যায়। ইংরেজ আমলে এই অঞ্চল পাতিলাদহ পরগণার অধীনে ছিল। বর্তমানে ইসলামপুর সরকারি কলেজের পশ্চিম দিকে সদর রাস্তার দক্ষিণে পাতিলাদহ পরগণার কাচারিঘর ছিল। বর্তমানে সেখানে সরকারি রাজস্ব বিভাগের বিভিন্ন অফিস বিদ্যমান।

এই উপজেলার সাথে ইংরেজ আমলের নীলচাষ ও নীলকর সাহেবদের অত্যচারের নানা ইতিহাস জড়িয়ে আছে। উপজেলা সদর থেকে দেড়মাইল দূরে পলবান্ধা ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নের ২৬৬ একর জমিসহ আশপাশের বিস্তৃত কৃষিজমিতে অত্যাচারী নীলকর সাহেবেরা চাষিদের নীলচাষে বাধ্য করেছিল। তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলার মধ্যে এই অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি নীল চাষ হতো। এখানে ইংরেজদের নীলকুঠি ছিল। এখনও নীলকুঠির ধ্বংসাবশেষ এবং নীল প্রস্তুতের সরঞ্জমাদির চিহ্ন বিদ্যমান রয়েছে।

ইসলামপুর নামকরণের বিষয়ে তিনটি মত প্রচলিত আছে। প্রথম মতটি হলো- মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের রাজত্বকালে ইসলাম খাঁ বাংলার সুবেদার হয়ে আসেন। সুবেদার ইসলাম খাঁ কোন এক সময়ে এ অঞ্চলে এসেছিলেন। তাঁকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য এ অঞ্চলের নাম ইসলামপুর রাখা হয়। দ্বিতীয় মতটি হলো- ইসলাম শাহ নামে একজন কামেল পীর এ অঞ্চলে ইসলাম ধর্ম প্রচারের জন্য এসেছিলেন। তাঁর নামানুসারে এ এলাকার নামকরণ ইসলামপুর হয়েছে। তৃতীয় মতটি হলো- প্রায় শতাধিক বছর পূর্বে পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে ইসলামপুর নামে একটি মৌজা ছিল। এই মৌজায় স্থানীয় জনগণ একটি বাজার প্রতিষ্ঠা করে। থানা সৃষ্টি হলে মৌজার নামনুসারে থানার নামকরণ হয় ইসলামপুর।

একসময় ইসলামপুর অঞ্চলটি তামা ও কাঁসা শিল্পের জন্য বিখ্যাত ছিল। ইসলামপুরের তামা কাঁসাজাত ধাতব শিল্পের সুনাম দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। এখানকার কর্মকারেরা নানা আকৃতির ও প্রকৃতির কাঁসার থালা, বাটি, গ্লাস, রেকাবি, পানের বাটা, সুরমাদানি, আতরদানি, দীপাধার, ধূপাধার, খাট-পালঙ্কের খুরা, কলসি, জগ, কাঁসার ঘণ্টা, ছুরি-তরবারির বাট প্রভৃতি প্রস্তুতে সিদ্ধহস্ত ছিল। এ প্রসঙ্গে কিংবদন্তি আছে যে, ইসলামপুরী মসৃণ গ্লাসে থাকা মিষ্টি খাবার জন্য গ্লাসের কানি বেয়ে পিঁপড়াও উঠতে পারত না। এছাড়া ইসলামপুরের বড় গোল বেগুন ও আখের গুড় এ অঞ্চলসহ সারাদেশে বিখ্যাত।

ব্রিটিশ আমলে এ অঞ্চলটি ময়মনসিংহ জেলার জামালপুর মহকুমার আওতাভুক্ত হয় এবং ১৯১৪ সালে ইসলামপুর থানা গঠিত হয়। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ২৭ এপ্রিল পাকিস্তান বাহিনী ইসলামপুরে প্রবেশ করে।[৩] ৭ ডিসেম্বর ইসলামপুর হানাদার মুক্ত হয়।[৪] জামালপুর জেলা হওয়ার পর ১৯৮৩ সালের ৩রা নভেম্বর ইসলামপুর উপজেলা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৮ সালে ইসলামপুর পৌরসভা গঠিত হয়। ২০১১ সালে ইসলামপুর পৌরসভাকে ‘গ’ শ্রেণি থেকে ‘খ’ শ্রেণি অর্থাৎ দ্বিতীয় শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত করা হয়।

ইসলামপুর থানা বাংলাদেশের জামালপুর জেলার অন্তর্গত ইসলামপুর উপজেলার একটি থানা। ১৯১৪ সালে ইসলামপুর থানা প্রতিষ্ঠিত হয়। যা পূর্বে ঢাকা রেঞ্জের আওয়াতাধীন ছিলো। ১২ অক্টোবর ২০১৫ তারিখ গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে ময়মনসিংহ রেঞ্জ প্রতিষ্ঠিত হয়। ময়মনসিংহ বিভাগের চারটি প্রশাসনিক জেলা তথা ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, জামালপুর ও শেরপুর জেলার সমন্বয়ে এই রেঞ্জ গঠিত। ইং ১৪-০৩-২০১৬ তারিখ রেঞ্জ ডিআইজির যোগদানের মাধ্যমে নব-গঠিত ময়মনসিংহ রেঞ্জের যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতে ইসলামপুর থানা ময়মনসিংহ রেঞ্জের জামালপুর জেলার আওয়াতাধীন হয়ে যায়।